মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৭

এই তামাম দুনিয়ায়: সজল আহমেদ এর কবিতা

এই তামাম দুনিয়ায়
এই তামাম দুনিয়ায়,
বিলাইতে দেয় কুত্তার গোয়ায়
দুনিয়াভি এইরাম হই গেসে ভাই-
ইত্যবসরে বেবাক চামচিকায়
বাদুড়রে খোঁচায়।
এই তামাম দুনিয়ায়
সব বান্দরে বাঘেরে গোয়ায়!
আসছে নব দিন,নব দুন্নাই
যেইদিন কুত্তা বিলাই
আর,
পাতি শৃগাল মিইলা-
মানুষরে গোয়াইবে।

সোমবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৭

সাবধান ভার্সন ২

সাবধান ভার্সন ২

- সজল আহমেদ

মনে কর তুমি কাউরে হোগা মারোনা
কাউরে হোগামারার টাইম তোমার নাই
এলাকায় পিচ্চি থিকা মুরব্বির তুমি ভাই
চাইর পাশে চ্যালাচামুন্ডা
রাস্তায় নামলেই হাক ডাক-
এলাকায় তোমার খুব নাম ডাক,
রেইন্ট্রি গাছে পাতি কাক-
ভুলে যাও কেন যৌবন-শক্তি কাকের ডাকের লাহান ক্ষণস্থায়ী।
তুমি গু চেনো?
জানো-তো কত ঘৃণার বস্তু, 
সেই গু, গায়ে লাগলে
ডিটারজেন্ট দিয়া চাইর পাঁচবার ধোবার পর,
আর থাকে না।
তুমি যখন কাউরে হোগা মারোনা
তুমি তখন সমাজের কাছে গু-
মনে রাইখো,গু ডিটারজেন্ট দিয়া না ধুইলে গন্ধ থাকে-
কিন্তু,
ডিটারজেন্ট দিয়া ধোয়ার পর
গু আর গু'য়ের গন্ধ থাকেনা।
তুমি যদি গু হও
তোমার গন্ধ চারদিকে ছড়াবে-
কিন্তু সমাজ যখন তোমার গন্ধে অতিষ্ঠ হবে,
তখন তোমারে সমাজ ধুয়ে ফেলবে
তোমার গন্ধ থাকবেনা-
সমাজ সর্বদা গন্ধহীন থাকবার চায়।
অতএব,
তুমি সমাজের কাছে গু হইয়োনা।
আর এখন,
এই তামাম দুনিয়ায়,
বিলাইতে দেয় কুত্তার গোয়ায়
দুনিয়াভি এইরাম হই গেছে ভাই-
ইত্যবসরে বেবাক চামচিকায়
বাদুড়রে খোঁচায়।
এই তামাম দুনিয়ায়
সব বান্দরে বাঘেরে গোয়ায়!
আসছে নব দিন,নব দুন্নাই
যেইদিন কুত্তা বিলাই
আর,
পাতি শৃগাল মিইলা-
মানুষরে গোয়াইবে।

না খাইয়া কি শুধু নাম মাত্র কুত্তা থাকে?: সজল আহমেদ এর কবিতা


না খাইয়া কি শুধু নাম মাত্র কুত্তা থাকে?

-সজল আহমেদ

কাঁধে সাদা বস্তা নিয়ে সেই সকালে বার হইছি,
কত পারা কত গলি যে ঘুরছি আল্লাহ মালুম!
এত ঘুইরাও বস্তা ভরেনাই দা!
কত মাইনষের কত কথা বাপু,
ওসব ডেইলি রুটিন।
এই আমার দোকানের সামনে থেইকা যাহ্,
বান্দির পোলা গাড়ির সামনে কি কলকব্জা খুইলা নিতে খাড়াইছোস?
ওয়ার্কশপের সামনে দিয়া যা, লোহা যদি একটা যায় থাপ্রায়া দন্ত ফেলায়া দিমু,
আরো কত কি গালিগালাজ দৈনিক যে হজম করি তার ইয়াত্তা নাই!
আমিও গালি দেই তয় মনে মনে,
আর ওনার কাছে কই, যেন হালাগো সব ঠাডা পইরা যায়।
গতরাতে খাওয়া হয়নি,
দুপুরে নাওয়া হয়নি,
ওস্তাদজ্বি বলছিলো-নেড়ি কুত্তা নাকি দিনের পর দিন না খায়া না নাইয়া বাঁইচা থাকে!
আমি নেড়ি কুত্তা না,
আমার লকব ও নেড়ি কুত্তা না,
তবে ২বেলা খাওয়া হয়নি।
কাগজের আইজ কাইল বড্ড কহর,
পোলাপান কাগজ ফালায়া দেয়না
কারুকলায় ব্যয় করে।
শেষ অবলম্বনে আছে লোহা,
মাদারী সব লোহার টিনের এত দাম কমাইলো,
১ দিনের টেহা জমাইলেও হালারা ২টা বেলার খাবার দিতে চায়না,
এল্লাইগ্যা পৃথিবীর খাওন বলতে আমার কাছে ড্যান্ডির কৌটা।
কৌটা খুইলা ঠোঙ্গায় ভইরা বুক ভইরা নিঃশ্বাস লই,
পিনিক!চাইরদিকে পিনিক!
সামনে পুলিশ কাকুরা খাড়ায়া তামশা দ্যাখে কিচ্ছু কয়না।
দেখবইবা না কেন?
কিচ্ছু কইবোই বা কেন?
মাঝেমইধ্যেই যে সিগারেট আর চায়ের পয়সা দিই।
তয় মাঝেমইধ্যে আবার পাছায় লাথ্থিও খাই!
ওসব সইত্য ইতিহাস,সব বাস্তব জিনিসপাত্তি।
মিথ্যা খালি,আমার নাই বাড়ি নাই ঘর
আমার নাই ভাই,নাই মা নাই বাপ,
মিথ্যা খালি আমার স্বজন নাই কেউ,
স্বজন বইলা খালি সাদা বস্তা আর রাস্তার কলকব্জা,
মিথ্যা খালি আমি,মিথ্যা খালি আমার জীবন।
আমি পুরাই অকেজো পুরাই মিথ্যা,
আমি ২-৩ বেলা না খাইয়া থাকা মানবীয় খোলসে ভর্তি কুত্তা।

মহাপুরুষ : সজল আহমেদ এর কবিতা

মহাপুরুষ 

-সজল আহমেদ

তুমি একজন বাংলাদেশী নও
যখন,
তুমি বিএনপি আর বঙ্গবন্ধুরে গালি দাও;
যখন,
তুমি আওয়ামিলীগ জিয়ারে তার খুনি বানাও।
পৃথিবী যখন ঘুরে দাঁড়ালো
নিজেগো নায়কদের মহাপুরুষের কাতারে আনলো।
মহা পুরুষ দ্বারা নিজেদের সমৃদ্ধ করলো
পৃথিবীর বাইরে যখন তারা বার্তা পাঠাইলো
আমরা তখন পরের বানানো ইন্টারনেট দিয়া ব্লগ চালাই
আর লুটেরাদের মাসোয়ারা দিয়ে
কেডা ধার্মিক কেডা বিধর্মী কেডা নাস্তিক
অথবা মহাপুরুষদের বদনাম গাই।

সাবাস বাংলাদেশ আগাইয়া যাও: সজল আহমেদ এর কবিতা

সাবাস বাংলাদেশ আগাইয়া যাও

-সজল আহমেদ


সাবাস বাংলাদেশ তুমি দুরন্ত গতিতে আগাইয়া যাও
ঠিক তোমার মত কইরা আগাও
বাকি পৃথিবীর হোগা জ্বলে জ্বলুক
তুমি পিছনে ফিইরা তাকাবানা।
সাবাস বাংলাদেশ তুমি লাফাইয়া লাফাইয়া আগাও
হোগা জ্বলে জ্বলুক প্রতিবেশী বা শত্রুপক্ষের
তুমি থামবা কেন ৭১ এ যখন থামোনি?
থামনি যখন হিংস্রদের থাবায়
জানি ওরা তোমার ভালো দেখতে পারেনা
কিংবা তলে তলে ওস্তাদগীরী ফলায়
কিংবা ক্রিকেট মাঠে তোমার ছেলেদের সাথে ক্ষমতা ফলায়,
তুমি তাতে পিছ পা হবা কেন?
জানি ওরা তোমার উন্নয়ন দেখতে পারেনা
হয়তবা তোমার উপরে বড়গীরী ফলায়
তলে কিংবা প্রকাশ্যে
তুমি তাতে থামবা কেন?
সমৃদ্ধ হচ্ছে তোমার অস্ত্র ভান্ডার
ক্ষণে ক্ষণে জন্মাইতেছে তোমার দামাল পোলা মাইয়া;
শাহরিয়ার কবিরের মত ভ্রুন ছুইড়া ফেলে 
যারা এই সবের সমুচিত জবাব দেবে,
পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে শোধ নেওয়া হবে
তোমার উপর চলা সব অমানবিকতার।
অতএব তুমি মাথা উঁচা করো আগাইয়া যাও
ওগো হোগা জ্বলছিলে,ভবিষ্যতে আরো জ্বলবে,
তাতে কি তুমি থাইমা থাকবা?
না কখনো না।


মিডিয়া আর পাগলা কুত্তা


সারা দুনিয়াভি ঝনঝন কইরা
বাজতাছে যুদ্ধের দামামা;
বাজতে যে আছে বাজতেই আছে,
দামামা আর থামেনা।
পাগলা কুত্তার দল সব দৌড়াইতাছে
নিরীহ প্রাণী কামড়াইতে
দৌড়াইতে যে আছে দৌড়াইতেই আছে কুত্তারা পিছন ফেরেনা।
শান্তির চুক্তি হাতে কুত্তার মালিকগণ
নীরিহ প্রাণীগণের দ্বারেদ্বারে ঘোরে,
সাবধান মাইরোনা মোর আবাল কুত্তাডারে।
নিরীহ প্রাণীকূল যখন-
 কামড় সামলাইতে একটা কুত্তা মারে,
কুত্তার মালিকগণ তহন
উপায় হারা;মিডিয়া চাইপা ধরে।
রংবেরঙয়ের মিডিয়া ভাই,
হলুদ, লাল আর বাদামী
ব্রেকিং নিউজ ভইরা তহন
কুত্তা লইয়া পিছলামি।
হাজার প্রাণী কামড়াইয়াও তহন
কুত্তাখান হয় সাধু,
কুত্তা মারার বিচার চাইয়া
ব্রেকিং নিউজ হয় শুধু।
নিরীহ প্রাণী উপায়হারা
কি করণ যায় ভাবে;
এমন ফাকে সুযোগ পাইয়া
চার-পাঁচ দেশের কুত্তা মালিক
 সবে মিল্লা কুত্তা ছাড়ে প্লেন ভইরা।



২৯-০১-২০১৭ (সজল আহমেদ)

রবিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৭

সজল আহমেদ এর প্রেমের কবিতা: এই জোসনা তোমার আমার

এই জোসনা তোমার আমার

-সজল আহমেদ


তোমার হাতটা ছুঁয়ে দেয়;
আমার অবাধ্য স্পর্ধা,
চায় না এ চিত্ত এই জোসনায়
থাকুক দুজনার মাঝে কোন বেড়াজাল বা পর্দা।
জোনাকি শুসে নিয়েছে
আমার যত ছিলো কুন্ঠা,
চাঁদের আলোয় তোমাকে দেখে ;
পালিয়েছে ছিলো যত ভয় কুন্ঠা,
তুমি ও নয় লজ্জা-মন
প্রকাশ পাচ্ছে তোমার উত-রোল আবেগ
আমায় জড়িয়ে ধর।
কোন ভয়ভীতি হীণমন্যতা;
ছুঁতে পারবেনা আমাদের-
এই জোসনা;আমি-তুমি
আর,
জোনাকি ঝিঁঝিঁ পোকা ;চাঁদ তারাদের।
অধরে-অধর চেপে আছি
অধরা আবেগ দুজনাতে-
একজোড়া জড়িয়ে আছি;কায়া শিহরিত,
তুমিও নয় লজ্জা-মন
প্রকাশ পাচ্ছে তোমার উত-রোল আবেগ
শক্ত করে আমায় জড়িয়ে ধর।
২৮/০১/২০১৭ ইং

শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৭

কোন ফ্যাসিবাদী আমার ভাই না -সজল আহমেদ এর কবিতা



যারা একটিমাত্র ইস্যু নিয়ে যুদ্ধ করে
আবার দিনশেষে,
তেনাদের পদতলে ঠাই খুঁজে মরে-
তোমরা আমার ভাই না
ফ্যাসিবাদী কখনো আমার ভাই না।
যারা অনৌচিত কে সেলুট মারে
ফ্যাসিবাদ কে আকড়ে ধরে
কলহকারী আমার ভাই না।
যারা বস্তি উচ্ছেদে চুপ মেরে যায়
বেশ্যা উচ্ছেদে গলা টাটায়
তারাও আমার ভাই না
কোন কলহকারী আমার ভাই না
কোন ফ্যাসিবাদী আমার ভাই না।
যারা উগ্রবাদকে চুমু দিয়ে
ফ্যাসাদ বাঁধায় মসজিদ কি মন্দিরে
ইমাম - পুরোহিতের গলা কাটে
তারাও আমার ভাইনা
কোন কলহকারী আমার ভাই না।
যারা পাঠ্যবইয়ের একাংশের সমালোচনা করে
ক্ষমতাসীনদের দু পা চাটে
আর মিথ্যে চেতনায় উদ্বুদ্ধ করায়
অলীক কল্পনায় ভাসায়
তারাও আমার ভাই না
কোন ফ্যাসিবাদী আমার ভাই না।
যারা মধ্যপথে যুদ্ধ থামিয়ে
হাত উঁচু করে হেরে যাওয়ার ভয়ে
তারাও আমার ভাই না
কোন ভীতুর-ডিম আমার ভাই না
কোন হেরোরা আমার ভাই না।
হেরে যাবে কেন?
হেরে যাওয়া শিখোনা কখনো
হেরে যায় পলপট ;স্ট্যালিন-হেরে যায় হিটলার
তুমি হারবে কেন?
পলপট ;স্ট্যালিন হিটলাররা কখনো আমার ভাই না।
তুমি হেরে যাবে কেন?
হেরোরা নয় বিখ্যাত
হেরো না হেরো না তুমি কখনো।

বাচ্চাকে কেন গোপাল ভাঁড় দেখতে দিবেন না?




জাতীতে আমাদের যেমন বাংলাদেশী ভারতী কিংবা হিন্দু মুসলমান ভাগ রয়েছে তেমনই ভাগ রয়েছে আমাদের ইতিহাসে।আর মানুষের ইতিহাসের দরকার রয়েছে ঐতিহাসিক গোলাম আহমেদ মোর্তজার মতে,মানুষই একমাত্র প্রাণী যাদের ইতিহাসের দরকার হয়।তবে এই দরকারি ইতিহাস পাল্টে যায়,জাতী ভেদে পাল্টায় আবার কিছু কুচক্রির হাতে পরে,সময়ে পাল্টায় অসময়ে ও পাল্টায়।
আবার ইতিহাস না বদলেও তৈরী হয় মানুষের মাঝে বিভক্তি।আমাদের কাছে যারা হিরো হয়তবা তেনাদের কাছে তাঁরা হচ্ছে কাপুরুষ বা বেঈমান। আবার আমাদের কাছে যারা কাপুরুষ, সুযোগবাদী তাদের কাছে তাঁরা সুপুরুষ ।
ধরুন গজনীর সুলতান মাহমুদ। আমাদের দেশে সুলতান মাহমুদকে দুই রুপে আমরা দেখি।"ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি " এই পাঠ্যবই তে আমরা সুলতান মাহমুদ কে বীর হিসেবে দেখি আবার কলকাতার পাঠ্য "ইতিহাসের" বই তে চিনি একজন সনামধন্য "লুটেরা" হিসেবে।
হ্যা ইতিহাস এমনই।আমাদের হিরো তো ওনাদের কাছে ভিলেন আবার ওনাদের হিরো তো আমাদের ভিলেন।
তখন কেমন হবে যখন আমাদের কাছে তাদের হিরো তথা আমাদের নিকট মীরজাফর জগৎশেঠদের চরিত্রের লোকদের আমাদের কাছে হিরোরুপে উপস্থাপন করা হবে? আর আমাদের বাচ্চারাও তাদের হিরোরুপে দেখা শুরু করবে?
এতদিন ধরে আমি "সনি আট" চ্যানেলটির গোপাল ভাঁড় কার্টুনটির প্রায় ৩৫৪ টি পর্ব দেখেছি।শুধুমাত্র যে এই ৩৫৪টি পর্বে বিনোদনই নিয়েছি তা কিন্তু নয়,সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা নিয়েছি কিভাবে ভারতীয় চ্যানেল সনি আট বিকৃত ইতিহাস বাচ্চাদের শিখায়।আপনি ভাবতেও পারবেননা কিভাবে বাচ্চাদের মনে আমাদের ইতিহাসের বিকৃতিরুপ ঢোকানো হয়।
তাই আপনাদের কাছে আমার একটা অনুরোৎঅনুরোধ দয়াকরে আপনার বাচ্চাকে কখনোই গোপাল ভাঁড় দেখতে দিয়েন না।
ছবিসূত্রঃ ইত্তেফাক

কেন গোপাল ভাঁড় বাচ্চারা দেখবেনা?

গোপাল ভাঁড়ে মাঝে মাঝেই আমরা "নবাব" কে দেখতে পাই,যিনি সব সময়ই কৃষ্ণচন্দ্রের গোপাল ভাঁড়ের কাছে জব্দ হচ্ছেন। কৃষ্ণচন্দ্র কে তিনি সিংহাসনচ্যুত করতে চান, ইত্যাদি ইত্যাদি।

১.আপনি জানেন ঐ নবাব কে?

যদি না জানেন তাহলে আমার এই তথ্য আপনাকে আশ্চর্য করবে! ভাবতে থাকুন নবাব টা কে! হ্যাঁ ঐ নবাব মূলত বাংলার নবাব " নবাব সিরাজউদদৌলা"। অ্যানিমেটেড সিরিজটিতে নবাবকে অন্যকোথার নবাব বা নবাব আলীর্বাদী খা হিসেবে বোঝাবে বোঝাতে চায় কিন্তু আসলে এই নবাবই হচ্ছেন আমাদের নবাব "সিরাজউদদৌলা"।অনেকে বলবেন উনি দিল্লির নবাব কিন্তু ইতিহাস বলে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র নবাব সিরাজউদদৌলার সময়কার রাজা এবং উনি শত্রু ভাবতেন একমাত্র নবাব সিরাজউদদ্দৌলাকেই।আর কৃষ্ণচন্দ্র হলেন নদীয়ার রাজা যে রাজ্যটি ছিলো নবাব সিরাজউদদৌলার আয়ত্ত্বে।

২.বিকৃত ও সঠিক ইতিহাসে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও নবাবের চরিত্র

২.১
মিথ্যে ঐতিহাসিক ঘটনা
উল্লেখ্য,আমরা গোপাল ভাঁড়ের পর্বগুলোতে দেখতে পাই, "কৃষ্ণচন্দ্রর খুবই সৎ নিষ্ঠাবান,দেশ প্রেমিক,প্রজাপ্রেমিক লোক গোপাল ভাঁড় সহ তার আরো বেশ কিছু রত্নসম লোক আছে।এর মধ্যে গোপাল ভাঁড়ই বেশি বুদ্ধিমান,দেশপ্রেমিক,গরীবের বন্ধু যিনি সব রকমের বিপদ থেকে রাজাকে বাঁচান। নবাব বারবার কৃষ্ণচন্দ্র কে জব্দ করতে চায় এবং গোপাল বুদ্ধি দিয়ে তাকে বাঁচান।নবাবের আরেকটা খারাপ দিক তিনি ইংরেজ তোষণ করে থাকেন।বাংলায় নবাব সর্বপ্রথম ইংরেজদের স্থান দিয়ে তাদের সাথে সুসম্পর্ক রাখছে অথবা দেখা যায় কৃষ্ণ চন্দ্র ইংরেজদের তোষণ করেন না।তিনি তোষামোদ করলেও গোপাল ইংরেজদের তাড়িয়ে দেয় ইত্যাদি ইত্যাদি।

২.২

গোপাল ভাঁড় বলে ইতিহাসে কেউ নেইঃ
আমরা মনে করি গোপাল ভাঁড় সত্যিই ছিলেন যিনি দুষ্টের দমন করতেন,বিখ্যাত হাস্যরসিক ও ভাঁড়, যিনি হাসি-ঠাট্টার মাধ্যমে অন্যদের আনন্দ দিতেন ইত্যাদি। আসল বা সঠিক হচ্ছে এর বিপরীত। গোপাল ভাঁড় নামক কারো অস্তিস্ত কখনোই ছিলোনা।এই চরিত্রটি মূলত কাল্পনিক।
গোপাল ভাঁড় নামে কেউ রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সময় নির্দিষ্ট করে ছিলেন না। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজত্ব সম্পর্কে ইতিহাসে প্রচুর তথ্য পাওয়া গেলেও তার কোথাও উল্লেখ নেই যে, তাঁর সভায় গোপাল নামে একজন ভাঁড় ছিলেন।(বাংলা পিডিয়া)তবে কোনো না কোনো বিদূষক রাজার প্রিয়পাত্র হন,সে বুদ্ধিমান হলেও হাস্যরসিক ছিলেন না। তবে সে যে গোপাল ভাঁড় তার কোন ইতিহাস কোন গ্রন্থে লেখিত নেই। গোপালের জন্ম কত বঙ্গাব্দে বা খ্রীষ্টাব্দে তার কোন নথিপত্র ইতিহাস দূরে থাক পুঁথিপত্রে ও তা কোথাও লেখা নেই,এমনকি বটতলার সাহিত্যেও না। তার জন্মস্থানের পক্ষেও কোনো নথি নেই, কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা হিসেবে তার সম্পত্তির কিংবা জায়গা-জমির কোনো প্রমান পাওয়া যায়নি কোথাও।উনিশ শতকের প্রথম দিককার "বটতলার সাহিত্যে" গোপাল ভাঁড়ের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়।গোপাল ভাঁড়ের বংশ পরিচয় পাওয়া যায় নগেন্দ্রনাথ এর বই "নবদ্বীপ কাহিনি" থেকে। তবে তা সূত্রহীন এবং অবিশ্বাস্য কেননা ঐ বইটায় নবদ্বীপ নিয়ে কিছু রূপকথার গল্পটল্প ও আছে। আশ্চর্যের বিষয় বইটির লেখক "গোপাল" চরিত্রে রহস্য রাখতে ঐ গ্রন্থে ভাঁড় গোপালের বাবার নাম জানালেও তার মা ও স্ত্রী সম্পর্কে কিছুই লিখেননি। নগেন্দ্রনাথ দাসের মতে গোপালের পদবী ছিল 'নাই'। তার মতে, মহারাজ তাকে হাস্যার্ণব উপাধী দান করেন। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ও ভাষাবিদ সুকুমার সেন বলেছেন ‘গোপাল ভাঁড় সম্পর্কে আধুনিক বাঙালির কৌতুহল থাকার ফলে বাস্তব অথবা কল্পিত ব্যক্তিটির সম্পর্কে যে জনশ্রুতি জাতীয় ঐতিহ্য গজিয়ে উঠেছে ও উঠছে তার বীজ হচ্ছে ভাঁড় নামের অংশটি, গোপাল ভাঁড়ের ভাঁড়টুকু সংস্কৃত শব্দ ভাণ্ডারের ‘ভাণ্ড’-জাত মনে করে অনেক গোপালের জাতি নির্ণয় করেছেন'।
চিত্রঃ কাল্পনিক গোপাল ভাঁড়(ছবিসূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা)

গোপাল ভাঁড় সম্বন্ধে বাংলাপিডিয়ার বক্তব্য হচ্ছে,
"গোপাল ভাঁড়ের কোনো ঐতিহাসিক স্বীকৃতি নেই। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজত্ব সম্পর্কে ইতিহাসে প্রচুর তথ্য পাওয়া গেলেও তার কোথাও উল্লেখ নেই যে, তাঁর সভায় গোপাল নামে একজন ভাঁড় ছিলেন।
উনিশ শতকের প্রথম দিককার বটতলার সাহিত্যে গোপাল ভাঁড়ের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। বাংলার ইতিহাস, এমনকি পৃথিবীর ইতিহাসেও, অল্প হলেও দেখা যায় সমষ্টিগতভাবে জনগণের উপস্থিত বুদ্ধি ও জ্ঞান কোনো একজন অতীত লোকের নামে প্রচলিত হয় এবং কালক্রমে তিনি জনগণের মধ্যে হিরো হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। গোপাল ভাঁড় হয়ত এমনি এক কাল্পনিক ব্যক্তিত্ব।"
[বাংলাপিডিয়ার তথ্য উপাত্ত]
মূলত এই বুদ্ধিমান প্রাণী বিশেষটি মোল্লা নাসির উদ্দিন এবং বীরবল চরিত্র দুটো কে কাউন্টার করতে তৈরী করা।

২.৩

রাজা কৃষ্ণচন্দ্র(১৭১০-৮৩)
চিত্রঃ কৃষ্ণচন্দ্রের মূর্তি

আমরা গোপাল ভাঁড়ে নিশ্চই রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে চিনি যিনি খুবই সৎ নিষ্ঠাবান,শিক্ষিত,দেশ প্রেমিক,প্রজাপ্রেমিক লোক। হ্যা একথা সত্য যে, তিনি শিক্ষিত লোক ছিলেনমোট ৩ টি ভাষা সহ সঙ্গীত ও অস্ত্রবিদ্যায় ও তিনি পারদর্শী ছিলেন।তিনি ছিলেন রাজনৈতিক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন কূটকৌশলী ব্যক্তি।এসব গুণ তার মধ্যে বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন একজন ইংরেজ প্রেমিক রাজা। রাজা কৃষ্ঞচন্দ্রের আমলেই মূলত বাংলায় ইংরেজরা ঢোকেন।যাকে নবাব সিংহাসনে বসিয়েছিলেন।এবং ১৭৫৭ সালে যখন ইংরেজ সাহেবদের কাছে বাংলার নবাব সিরাজউদদৌলা পরাজিত ও নিহত হলেন তখন নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এবং কোলকাতার রাজা নবকৃষ্ঞদেব সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলেন।উল্লেখ্য যে, রবার্ট ক্লাইভ পলাশীর যুদ্ধ ময়দানে যাওয়ার সময় কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের প্রাসাদে রাত যাপন করেছিলো।তারা কোম্পানির জয় কে হিন্দুদের জয় মনে করতেন।আরো উল্লেখ্য যে,নবাব হেরেছেন আর কোম্পানি জিতেছেন এই খুশিতে সেই ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন এর পরপরই নবকৃষ্ঞ চালু করেন দুর্গাপূজা।আর কৃষ্ণচন্দ্র চালু করেন জগদ্ধাত্রী পুজা।
বঙ্কিমচন্দ্র কৌতুক করে লিখেছিলেন, দূর্গোপূজোর মন্ত্র ইংরেজীতে পঠিত হইবে।[বাঙ্গালী জীবনে রমনী:নীরদচন্দ্র চৌধুরী,পৃষ্ঠা নং ১৮]
ইংরেজদের প্রতি পক্ষপাতিত্বের পুরস্কারস্বরূপ কৃষ্ণচন্দ্র ইংরেজ কর্তৃক ‘মহারাজা’ উপাধিতে ভূষিত হন। তদুপরি ক্লাইভের নিকট থেকে উপঢৌকন হিসেবে পান পাঁচটি কামান।(বাংলাপিডিয়া)
[কৃষ্ণচন্দ্র সম্বন্ধে সামান্য তথ্য "এ এক অন্য ইতিহাস গ্রন্থের পৃষ্ঠা নং ৩২ এ দ্রষ্টব্য ]

শেষকথা
আমরা ইতিহাসে মীর জাফর মীর জাফর বা জগৎশেঠ জগৎ শেঠ করে ঘৃণা প্রকাশ করলেও তাদেরই মত একজনকে হিরো রুপে আমাদের শিশুদের কে দেখাই।আবার প্রকৃত ইতিহাসকে লুকিয়ে, আমাদের নায়ক নবাব সিরাজউদদৌলাকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এই কার্টুন সিরিজে বদ,শয়তান, ইংরেজ তোষণকারী হিসেবে দেখানো হয়, অথচ তিনি ইংরেজদের বিপক্ষে যুদ্ধ করে নবাব প্রাণটাই খোয়ালেন।অপরদিকে ইংরেজদের পা চাটচাটি করা রাজা কৃষ্ণচন্দ্র কে দেখানো হয় সুপার হিরো হিসেবে!এই সিরিজটায় একেবারে সুক্ষ্ম ভাবে কাল্পনিক গোপাল দ্বারা শিশুর কাছে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে হিরোরুপে তুলে ধরা হচ্ছে যা ন্যাক্কার জনক!
আপনি কি চান আপনার বাচ্চা ছোটবেলা থেকেই আপনার আমার হিরো সিরাজউদদৌলার প্রতি তীব্র ঘৃণা নিয়ে বড় হোক?
যদি না চান তাহলে মিথ্যা ইতিহাসের ভিত্তিতে গড়া গোপাল ভাঁড় থেকে তাকে দূরে রাখুন তাকে।
তথ্যসূত্রঃ

  1. উইকিপিডিয়া(কৃষ্ণচন্দ্র রাজা)
  2. বাংলাপিডিয়া(গোপাল ভাঁড়)
  3. এ এক অন্য ইতিহাস পৃষ্ঠা ৩২(গোলাম আহমেদ মোর্তজা)


২৭/০১/২০১৭ (সজল আহমেদ-প্রবন্ধ)
©লেখাটি অনুমতি ব্যাতিত অন্যকোথাও প্রকাশ করা বেআঈনি

বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৭

আমি কবর দেখে আতকে উঠি

আমি কবর দেখে আতকে উঠি

-সজল আহমেদ

আমি কবর দেখলেই আতকে উঠে কাঁদি,
এই বুঝি চলে আসলো আমার মরার চিঠি!
এই বুঝি ঝড়ে পরল সেই বড়ই পাতা,
যেই পাতাতে সব মাখলুকের নাম যতনে লেখা! 
৩টি মানুষ উধাও হলো,আরো কত বাকি,
জীবনখানা মোদের সবার সুভাঙ্করের ফাঁকি!
মধ্যখানে মোর দাদি আছে ডান পাশে মোর দাদা,
বাম পাশেতে চাচার কবর, বয়স ছিলো কাচা!
বয়স কাচা, তবুও চাচা মরল সবার আগে,
আগে মরেই প্রমাণ দিলো,মৃত্যু কত কাছে!
ওগো প্রভূ হাত তুলে চাই ক্ষমা তোমার কাছে,
মৃত্যু বেলা শান্তি দিও, নাজাত দিও আখিরাতে!

মাইয়া মানুষ আর কোরআন

মাইয়া মানুষ আর কোরআন

-সজল আহমেদ

বেপর্দা মাইয়াগুলা ধর্ষন কইরা দে,
আবে মামদির পো তোরে ধর্ষন করার রাইটস দিছে কে?

আল্লাহ্'র কোরআন কয়,
ওগো মুমিন, নিজে হও সংযত!
মহিলা দেইখোনা তুমি,
তাকায়া বেহায়ার মতো!

মঞ্চে তাকায়া দেখি বক্তব্য দেয় এক শালা,
নারীর অধিকার চাই কয়া ফাল পারতেছিলো মেলা,
মনটায় কয় কান ধইরা কই,
টিভি বিজ্ঞাপনে কেন একমাত্র মহিলারাই খোলামেলা?

বিকিনা পরায়া মায়রে হয় যদি সুন্দরী প্রতিযোগিতা?
কোথায় থাকে তাইলে নারী অধিকার?
আদতে তো রক্ষিতা!

আই ওয়ান্না ফাক দ্যাট হিউম্যানিটি -সজল আহমেদ

আই ওয়ান্না ফাক দ্যাট হিউম্যানিটি

-সজল আহমেদ

আমি মঞ্চে খাড়ায়া কইছি পৃথিবীময় আজ মানবতা বিলুপ্ত,
দেশে মানুষ না খায়া মরতাছে,
দেশে বস্তির সংখ্যা দিনকে দিন বাইড়া যাচ্ছে,
দেশ আজ গরীবখানা, দেশে মানুষ না খায়া মরে,
শিশু অপুষ্টি,বছর বছর অটিজম জন্মাইতেছে!
আমি হিউম্যানিটির কথা কই,আজ বিলুপ্ত হিউম্যানিটি,
ব্যাংক ব্যালেন্স আমার দশকোটি,
দশ বছর টানা দিতাছি কর ফাঁকি!

অন্যদিকে,
দেশের জনতার রক্ত চুইষা চুইষা খায় টেলিকম কোম্পানি,
ব্রিটিশগো মতন ওরাও গাড়ছে নীল কুঠী,
এয়ারটেল, গ্রামীণ, বাংলালিংক, রবি শত শতকোটি টাকা ভ্যাট দিবেনা!
বিটিআরসি ও তার খোঁজ নিবেনা!
রবী বছরে একবার জনগণের টাকায় পথশিশুগো গেঞ্জি দিবে,
জনগণের পুটকি মাইরা নিজেগো নাম ফুটাইবো।
গেঞ্জিভরা রবীর সিল থাকবো আর টিভিতে অ্যাড হবে,
রবী আছে গরীব পুলাপানের পাশে!
ওগো চালাকি নিয়া কোন কথা কেউ কইবেনা!
ঐদিকে গরীব ব্যাটারা যদি সামান্য পাদ ও দেয়,
তাইলেও তাগো ফাঁক পাইলে পাছা কাইটা নেয়!

ভাই তোরে বড্ড মনে পরে

ভাই তোরে বড্ড মনে পরে

-সজল আহমেদ

তুই মোর গেঞ্জি পরছ ক্যা?
তুই মোর প্যন্ট পরছ ক্যা?
তুই মোর টাহা ধরছ ক্যা?
তুই মোর মোবাইল টেপছো ক্যা?
ওগুলো এখন পুরোনো স্মৃতি,
ওতে সান দেই,আর ভাবি,
ভাই তুই কবে বাড়ি ফিরবি?
তোর শোবার চৌকিটা,পড়ার টেবিলটার,
তোর হ্যাঙ্গার আর পুরোনো গেঞ্জি গুলোর একচ্ছত্র মালিক আমি,
তাকিয়ে দেখি তোর সেই পুরোনো দুটো বালিশ,
আধোয়া কাভার,তুই ফিরলে করবে মনের মতন নালিশ!

অযতনে পরে আছে সব ইলেকট্রনিক্স,
নামাজের প্লাস্টিক পাটি,অযতনে আছে সব,
এখন সারাটা ঘরময় কেমন ঘোমড়া একটা ভাব!

ছিড়ে গেছে কিছু বই,
তোর খুব শখের,
বুখারী,নবী কাহীনি,দ্য হান্ড্রেড পরিপাটি আছে,
বাকি সব অযতনে মলাটে ধুলো জমে আছে।
ভাই,
একসাথে ফজরে যুহরে, মাগরীবে মসজিদে যাইনা অনেকদিন,
হয়না কোন টপিক নিয়ে দুভাইয়ের ঘষা মাজা তর্ক বহুদিন!
ভাই খাইনা ভাত একসাথে জানিস কতদিন?
করিনা বায়না করিনা ঝগড়া কারো সাথে অনেকদিন!
তোর পুরোনে গেঞ্জিগুলো যতনে রেখেছি,
মাঝে মাঝেই পরি,হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখিনি,
ডিটারজেন্ট তোর গায়ের গন্ধটাকে অবশ্য বাঁচিয়ে রাখেনি!
রাত ১২টায় এখন আর শুনিনা কারো কাশি,
না দেয়না কেউ নাটক দেখে খলখলিয়ে হাসি!
সত্যি বলতে ভাই,
তোকে ছাড়া বড় কষ্টে আছি!

মহিলা মানুষ

মহিলা মানুষ

-সজল আহমেদ

তলপেটের কাপড় ফেলাইন্না,
যুবক পোলাপানের ঘুম হারাম!
ঝুমকাওয়ালি পথ ধইরা হাটে,
বুড়া ব্যাডাগুলান ফ্যালফ্যাল কইরা তাকায়,
মাদারী মাগী জাহান্নামের চৌদ্দ শিকে যাউক!
আবে হাটে কেবা কইরা,
মাগীর মাগী লাজ শরম নাই!
পেটের কাপড় নাই, তলেও নাই উপরেও নাই,
আবাল হইতে বৃদ্ধ দেখে, কী আছে ওর ভিতরে?
রসের ডিব্বা না খাঁটি মধু?
লুঙ্গী গুটায়েছে বুইড়া বেটা,
তল দিয়া বড় বড় দুইটা বিচি দেহায়,
ছবক দেয়,আবে পর্দানশীনতা নাই দ্যাশে!
বুইড়া আর মহিলার মধ্যে খাড়ায়া সূরা নূর আল্লাহ্'র কালাম,
চক্ষু সংযত কর মুমিন,
আর লজ্জাস্থানের হেফাজাত কর!
বুইড়া ছবকের সময় লজ্জা ঢাকছিলো কী?
কেউ জিগায়না, কেউ বুইড়ারে দ্যাহেনা,
সবাই ডিব্বা দ্যাহে ডিব্বা!
মাদারী মহিলা জাহান্নামের চৌদ্দ শিকে যাউক!
আবে তুমি কী করবা?
মহিলার তলপেট দেখবা?
না চক্ষু সংযত রাখবা?
রসের ডিব্বা নিবা?
না আখেরে সব নিবা?
তলপেট দেখবা?
না চক্ষু নিচে নামাবা?

আমি আল্লাহ্'র কাছে বইলা দেবো সব

আমি আল্লাহ্'র কাছে বইলা দেবো সব

-সজল আহমেদ

 আমি আল্লাহ্'র কাছে বলে দেবো সব!
পথঘাট আর মানুষগুলো কেমন করেছে আমার সাথে!
কেমন করে আমায় শোওরের বাচ্চা বলে বিচিতে লাথি মেরেছে,
আমি ব্যথা না পাওয়ার ভান ধরে ছিলাম!
বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর বিচিটা ধুমছে ফুলে ফেপে উঠলো!
আমি বলে দেবো সব,
বড় ঘরের বড় মানুষগুলো কেমন আচরণ করেছে আমার সাথে,
আমি আল্লাহ্'কে বলে দেবো সব,
টাকার অভাবে চিকিৎসা হয়নি আমার,
অথচ দায়ী ওরা।
অথচ বড় বড় ঘরগুলোতে টাকার ছিলোনা অভাব!
আমি আল্লাহ্'কে বলে দেবো,
শুয়েছিলাম ৩দিন ধরে হসপিটাল সিটে খবর নেয়নি কেউ!
না ডাক্তার, না নার্চ না আয়া না কেরানী না কেউ না!
আল্লাহ্'কে বলে দেবো,
ওরা সুখেই ছিলো,আর আমরা যারা গরীব,
তারা মরেছি অন্ধকারে!
আল্লাহ্'কে বলে দেবো,
ওরা বড়সড় রোগ হলে চিকিৎসা নিতে আমেরিকা পারি জমায়,
আর আমি?
ঐ যে ছউচ্ছা লৌহ(পঁচারক্ত)মাখা মেঝেতে গড়ায়ে এপার হইতে ওপার যাই!
আমি কেঁদে উঠে কান ফাটানো চিৎকার দিয়ে বলব,
ওরা ঐ যে অট্টালিকাবাসী,আমারে করেছে হেলা,
গালি দিয়েছে -হেলা করেছে ডেকেছে বান্দির পোলা!
আমি হাতুরি শাবল চালায়েছি মাঠে,
ওরা ডান্ডা চালায়েছে আমার পিঠে!
না খায়া কাঁদছি,আর ওরা পরিসংখ্যান করছে,
দেশে না খায়া এখন আর কেউ মরেনা!
আমি আরো বলব,
ধনীর দুলাল মাথা ফাঁটায়েছে আমার,আর আমিই করেছি কারাবাস!
ওরা লাথি দিয়েছে তলপেটে, আমার খালিপেট!
ওরা আমার গায়ের গন্ধ শুকেছে বলেছোে শালা ক্ষ্যাত!
ক্ষাণকির পোলা নাওনা ক বছর গায়ে বিশাল গন্ধ দেওনা কি পারফিউম?
আমি তো পারফিউমই চিনিনা কোথায় দিবো?
বিকট গন্ধওয়ালা একটা পানির বোতল?
সে যাইহোক, সহ্য করেছি মুখ বুজে!
একদিন আমিও দেখবো!
ওদিন বিচার হবে, বলব ওনাকে সব,ওরা খাবে মার,আমি খবিসের মত দাঁড়ায়ে বলব সাবাস!

ও বোন তুমি নিজের স্তনকে অভিশপ্ত ভাবো?

ও বোন তুমি নিজের স্তনকে অভিশপ্ত ভাবো?

-সজল আহমেদ

আমরা ও দুটো খেয়েই বড় হয়েছি
ওদুটোই হৃষ্টপুষ্ট করছে আমাদের
নিজের স্তন কে অভিশাপ ভাবেন এমন নারীর কথা আমি জানিনে!
নিজের স্তন জোড়া নিয়েই যিনি এগিয়ে গেছেন
তিনিই বেগম রোকেয়া
তিনিই সুফিয়া কামাল
তিনিই আম্মা জাহানারা ইমাম
তিনিই মাদার তেরেসা।
তুমি নিজের স্তনকে অভিশপ্ত ভাবো
 তুমি নিজেকে নিয়েই হীনমন্যতায় ভোগো,
তুমি যে একজন "নারী" 
এটা নিয়েই তোমার জ্বালাপোড়া রয়েছে।
তুমি ভুলে যাচ্ছ,
তুমিই আমার বোন-
আমার সামনে তোমার ঘটা করে স্তন গুঁজবার মহড়া
বাহ্ নিয়তি বাহ্!
তবে,
 আদীমকাল থেকেই স্তনের উপর পুরুষের একটা টান রয়েছে,
আমি এমন ডজন খানেক লেখকের কথা জানি যারা যৌনতার ক্ষেত্রে তোমাদের"স্তন" কে যৌনতার মূল করে লেখা লিখেছেন।
এটা ওদের দোষ বোন,
আমার চোখের না।
 আমরা গোড়া থেকেই শিখে আসছি
 যৌনতার মূল একটা অংশই হলো স্তন,
আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম শিখবে
 পুরুষকে কিভাবে স্তন বিমুখ করা যায় 
স্তন গোঁজার মহড়া না করে
আমাকে ভাই হিসেবে দেখো,
আমি তোমাকে আমার বোন।

না খাইয়া কি শুধু নাম মাত্র কুত্তা থাকে?

না খাইয়া কি শুধু নাম মাত্র কুত্তা থাকে?

-সজল আহমেদ

কাঁধে সাদা বস্তা নিয়ে সেই সকালে বার হইছি,
কত পারা কত গলি যে ঘুরছি আল্লাহ মালুম!
এত ঘুইরাও বস্তা ভরেনাই দা!
কত মাইনষের কত কথা বাপু,
ওসব ডেইলি রুটিন।
এই আমার দোকানের সামনে থেইকা যাহ্,
বান্দির পোলা গাড়ির সামনে কি কলকব্জা খুইলা নিতে খাড়াইছোস?
ওয়ার্কশপের সামনে দিয়া যা, লোহা যদি একটা যায় থাপ্রায়া দন্ত ফেলায়া দিমু,
আরো কত কি গালিগালাজ দৈনিক যে হজম করি তার ইয়াত্তা নাই!
আমিও গালি দেই তয় মনে মনে,
আর ওনার কাছে কই, যেন হালাগো সব ঠাডা পইরা যায়।
গতরাতে খাওয়া হয়নি,
দুপুরে নাওয়া হয়নি,
ওস্তাদজ্বি বলছিলো-নেড়ি কুত্তা নাকি দিনের পর দিন না খায়া না নাইয়া বাঁইচা থাকে!
আমি নেড়ি কুত্তা না,
আমার লকব ও নেড়ি কুত্তা না,
তবে ২বেলা খাওয়া হয়নি।
কাগজের আইজ কাইল বড্ড কহর,
পোলাপানন কাগজ ফালায়া দেয়না
কারুকলায় ব্যয় করে।
শেষ অবলম্বনে আছে লোহা,
মাদারী সব লোহার টিনের এত দাম কমাইলো,
১ দিনের টেহা জমাইলেও হালারা ২টা বেলার খাবার দিতে চায়না,
এল্লাইগ্যা পৃথিবীর খাওন বলতে আমার কাছে ড্যান্ডির কৌটা।
কৌটা খুইলা ঠোঙ্গায় ভইরা বুক ভইরা নিঃশ্বাস লই,
পিনিক!চাইরদিকে পিনিক!
সামনে পুলিশ কাকুরা খাড়ায়া তামশা দ্যাখে কিচ্ছু কয়না।
দেখবইবা না কেন?
কিচ্ছু কইবোই বা কেন?
মাঝেমইধ্যেই যে সিগারেট আর চায়ের পয়সা দিই।
তয় মাঝেমইধ্যে আবার পাছায় লাথ্থিও খাই!
ওসব সইত্য ইতিহাস,সব বাস্তব জিনিসপাত্তি।
মিথ্যা খালি,আমার নাই বাড়ি নাই ঘর
আমার নাই ভাই,নাই মা নাই বাপ,
মিথ্যা খালি আমার স্বজন নাই কেউ,
স্বজন বইলা খালি সাদা বস্তা আর রাস্তার কলকব্জা,
মিথ্যা খালি আমি,মিথ্যা খালি আমার জীবন।
আমি পুরাই অকেজো পুরাই মিথ্যা,
আমি ২-৩ বেলা না খাইয়া থাকা মানবীয় খোলসে ভর্তি কুত্তা।



কবিতা-সাবধান!

সাবধান!

-সজল আহমেদ

মনে কর তুমি কাউরে হোগা মারোনা
কাউরে হোগামারার টাইম তোমার নাই
এলাকায় পিচ্চি থিকা মুরব্বির তুমি ভাই
চাইর পাশে চ্যালাচামুন্ডা
রাস্তায় নামলেই হাক ডাক-
এলাকায় তোমার খুব নাম ডাক,
রেইন্ট্রি গাছে পাতি কাক-
ভুলে যাও কেন যৌবন-শক্তি কাকের ডাকের লাহান ক্ষণস্থায়ী।
তুমি গু চেনো?
কত ঘৃণার বস্তু -
সেই গু, গায়ে লাগলে
ডিটারজেন্ট দিয়া চাইর পাঁচবার ধোবার পর,
আর থাকে না।
তুমি যখন কাউরে হোগা মারোনা
তুমি তখন সমাজের কাছে গু-
মনে রাইখো,গু ডিটারজেন্ট দিয়া না ধুইলে গন্ধ থাকে-
কিন্তু,
ডিটারজেন্ট দিয়া ধোয়ার পর
গু আর গু'য়ের গন্ধ থাকেনা।
তুমি যদি গু হও
তোমার গন্ধ চারদিকে ছড়াবে-
কিন্তু সমাজ যখন তোমার গন্ধে অতিষ্ঠ হবে,
তখন তোমারে সমাজ ধুয়ে ফেলবে
তোমার গন্ধ থাকবেনা-
সমাজ সর্বদা গন্ধহীন থাকবার চায়।
অতএব,
তুমি সমাজের কাছে গু হইয়োনা।

তোমার কবিত্বশক্তিডারে ডরাই আমি কবি

তোমার কবিত্বশক্তিডারে ডরাই আমি কবি

-সজল আহমেদ

কয়েকটা আকাঠ ছন্দে মেলানো শব্দগুচ্ছ,
ধাঁচে একটা বড়সড় অ্যাটমবোম্ব
তোমার ছন্দের উদ্ভাবন
উৎপীড়নকারী তামাম ভূস্বামীর পতন।
অতএব,
কবি তুমি কলম থামায়োনা।
যেদিন অতথা এহুদীয় পাত্তি পাত্তি আইন সব ধুলায় লুটায়ে যাবে,
পৃথিবীতে আর মানুষ্যত্ব বইলা কিছুই থাকবেনা,
সেদিনও তোমার ছন্দ চলবো-
এ ছন্দের কোন পতন নাই ওগো কবি
পত্তন আছে নতুন নতুন সব অভ্যুত্থান এর।
তুমি উদার মস্তকে লিখে যাও
তোমার সব অভ্যুত্থানের কথা। 

কবিতা- প্রার্থনা আমি করি

প্রার্থনা আমি করি

-সজল আহমেদ

প্রভূ আমি আপনারে দেখিনায় কোনদিন,
তবুও,
আপনার কাছে করি নত শিরে প্রার্থনা
ভুল কিছু হলে,
ক্ষেমিয়া নিও আমারে।
নিত্য তোমারে স্মরি প্রভূ
আমার সেইদিনটা কেমন হবে প্রভূ,
যেদিন মাথায় এক ঝাঁক অপরাধ বোধ নিয়া-
কান্দুম তোমার সামনে খাড়াইয়া।
তুমি কি আমারে দুরদুর কইরা তাড়ায়া দিবা?
নাকি মাফ কইরা রহমতের ছায়ায় নিবা?
আমি জানিনা।
অতএব,
তুমি আমারে এমন নজরে দেইখো না-
যেমন দেখবা নমরুদ জেহেল ফেরাউনদের।
দুনিয়াভি আমি আমার অহংবোধ দেহাইছি
কবিতায় বড় বড় কথা লিখছি-
অথচ,
আমি কেউনা
কোন ভালো কামের রেকর্ড নাই
অথচ,
সাধু সাজছি!
প্রভূ আমি লোভী-
প্রভূ আমি কৃপণ,
আমি শিংঅলা শয়তানের মতন
প্রভূ,
ক্ষেমিয়া নাও আমার এসব আচরণ।
প্রভূ,
আমি হায়াহীন খালি তোমার কাছে
তোমার কাছেই নির্লজ্জের মতন সব চাই।
আর কার কাছে চামু?
আর দেওনের মতন আমার কেহ নাই।
প্রভূ আমারে সবকিছু বেশি বেশি দেও।