বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

পীরপতন:কিশোরদের মজার ছোট গল্প


পীরপতন

-সজল আহমেদ
ছবিঃবিগস্টোক


এক গ্রামে এক ভন্ড লোক আখড়া বানালো।আখড়া বানিয়ে ওনার নাম দিলেন ত্যানাপীর।আখড়া বানিয়ে উনি বেশ ভক্ত ও জুটিয়ে ফেল্লেন।দিনকে দিন ওনার বেশ ভক্ত গজিয়ে উঠতে লাগলো, সপ্তাহ পপর পর আসর ও বসে আর হাদিয়াও পেতে থাকলো।উনি আবার ল্যাংটা থাকতেন।তো এ নিয়ে ঐ গ্রামের ধর্মীয় পন্ডিতগণ ওনার বিরোধিতা করতে লাগলো।তারা সবাইকে সচেতন করলো এই বলে যে,ধর্মে ল্যাংটা থাকার কোন আইন নেই।তারা একসময় প্রমাণ করে ফেল্ল যে ঐ পীর সাহেব একটা বিশাল ভন্ড এবং কুৎসিত মনের লোক,ল্যাংটা থাকা ধর্মে নিষিদ্ধ। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হলোনা ঐ ভন্ড ল্যাংটা বাবা তার ভন্ডামি চালিয়েই যেতে থাকলো।উপায় আপায় না পেয়ে ঐ আলেমগণ সবাই ভন্ড পীর কে শায়েস্তা করতে গেলো।এই কথা আবার ভন্ডপীর কেমন করে যেন শুনে ফেল্ল।ঐ ব্যাটা আবার ছিলো খুব ধূর্ত।উনি ওনার কিছু চ্যালাকে ডেকে বুদ্ধি করলো।
ওলামারা অাখড়ার বাইরে দাঁড়িয়ে ডাকলো,ঐ ভন্ডপীর আগে ভাগে চ্যালা পাঠিয়ে দিয়ে তার শিখানো কথা বলতে বল্ল।ওনার চ্যালারা এসে জোরসে ডাক দিয়ে বল্ল,বাবা আসছেন।আপনাদের মাঝে যারা অসৎ,কাফের,ফাসেক,মিথ্যাবাদী, শয়তান,ছিনতাইকারী,নেশাখোর,সুদখোর,ঘুষখোর,জেনাকারি একমাত্র তারাই বাবার পরনে কোন কাপড় দেখতে পাবেন না।আর যারা সৎ তারা সবাই বাবার পরনে কাপড় দেখতে পাবেন।ঘোষনা দেয়া মাত্রই ল্যাংটাপীর নামলো পরনে কোন কাপড় ছাড়াই।এবার চ্যালারা জিজ্ঞেস করলো,আপনারা কে কে কাপড় দেখতে পাচ্ছেন তারা হাত তুলুন।দেখা গেলো সেই আলেমরা সহ সবাই হাত তুল্ল।চ্যালারা আবার বল্ল,কাপড় ছাড়া কারা দেখছেন?
কেউই হাত তুল্লোনা।এবার ভন্ডপীর অপরিষ্কার দাঁতগুলো বের করে বল্ল,তাহলে তো প্রমাণই হলো আমি ভন্ড না!
সেদিনকার মত ব্যর্থ হয়ে আলেমরা সবাই চলে আসলো,কাজে সফল না হয়ে তারা যারপরনাই লজ্জিত এবং পীরের ওপর ক্ষিপ্ত হলো।তারা সবাই প্রতিজ্ঞা করলো এইবার এই ভন্ডকে তাড়াবেই!তারা এর পরের দিন ঐ তারা ঐ পীর সাহেবের আখড়ায় গেলো,তাদের সাঞে নিয়ে গেলো একটা ৪ বছরের শিশুকে।পীরের আখড়ায় গিয়ে তারা আবার ত্যানাপীরকে ডাকলো।ত্যানাপীর পূণরায় তার চ্যালাদের পাঠিয়ে আগের মত বক্তব্য দেওয়ালো।এরপর ত্যানাপীর নামলো।ত্যানাপীর বুঝতে পারেনি আসলে তার সাথে কি ঘটতে যাচ্ছে,উনি এসে বেশ ভাব নিয়ে দাঁড়ালো।ওনার ভক্তরা এবার আগের মত বল্ল,আপনারা কে কে কাপড় দেখতে পাচ্ছেন তারা হাত তুলুন।দেখা গেলো সেই আলেমরা সহ সবাই হাত তুল্ল।চ্যালারা আবার বল্ল,কাপড় ছাড়া কারা দেখছেন?
কেউই হাত তুল্লোনা।এবার ওলামারা সুযোগ বুঝেই ৪ বছরের শিশুটাকে আড়াল থেকে বের করলেন এবং সবার উদ্দেশ্যে বল্লেন,
"আপনারা শুনুন!" উপস্থিত সবাই চুপ মেরে গেলো।
"আজই প্রমাণ হয়ে যাবে এই ত্যানাপীর ভন্ড নাকি ওলী" সবাই বেশ আগ্রহ নিয়ে ওলামাদের দিকে তাকালো।ওলামাদের মধ্যে একজন বল্ল,
"শিশুরা কি পাপী না নিষ্পাপ?" উপস্থিত সবাই বল্লেন" নিষ্পাপ "।তাহলে ও'ই বলুক পীর সাহেবের পরনে কাপড় আছে কিনা" ওলামারা বাচ্চাটাকে মঞ্চে উঠালেন এবং জিজ্ঞেস করলেন,আচ্ছা বাবু ঐ যে লোকটাকে দেখছো ওনার গায়ে কি কোন কাপড় আছে?
শিশুটা বেশ কিছুক্ষণ দেখে ভয় পেয়ে বল্ল,
"ও মা থিঃথিঃ উনিটো নেংতা থিঃ থিঃ পাগোল পাগোল!"
 এবার ওলামারা বেশ রাগ নিয়ে বল্ল,
"দেখলেন তো এই নিষ্পাপ শিশুটি কি বল্ল? আসলে আমরা সবাই এই শয়তানটাকে ন্যাংটা দেখেছি কিন্তু অসৎ হওয়ার ভে বলিনি!আসলে ও একটা ভন্ড এবং চালবাজ।ওকে সবাই গণধোলাই দিলেই সত্য বের হবে।"
এবার সবাই ক্ষেপে গেলো।সুযোগ বুঝে পীর আর চ্যালারা দিলো দৌড়,কিন্তু এতগুলো লোকে
ছবিসূত্রঃইন্টারনেট
র মধ্য থেকে আর কই যাবেন।দৌড়ে ওনাকে ধরে রামধোলাই দিলো।রামধোলাইর চোটে ব্যাটা ভন্ডপীর অক্কা পেলো।

  • টীকাঃঅতি চালাক এর গলায় দড়ি। 
  • টীকাঃ অসৎ এর সম্পদ দীর্ঘস্থায়ী নয়। 
  • টীকাঃনিশ্চই মিথ্যে বিলুপ্ত হবে,এবং সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে,মিথ্যে সে তো বিলুপ্ত হওয়ারই ছিলো।(কোরআন)
(এই গল্পটির কিছু অংশ গ্রাম্য গল্পকারদের কাছ থেকে শোনা বাকিটা আমার স্বরচিত।এই গল্পে ককোন ধর্ম বর্ণ বা কোন জাতীকে উদ্দেশ্য ককরা হয় িন।গল্পের জন্য যদি নিছকই কেউ মনে ব্যাযাথা টপান তাহলে নিজগুণে ক্ষেমিয়া নিবেন
সজল আহমেদ) 

কবিতা:বৃষ্টি

বৃষ্টি

-সজল আহমেদ

মেঘের ঘনঘটা,
নর্তকীর পায়ের ঘুঙুরের তান
মেঘ ঝুমঝুম টিনের চালায় পরেরে
টিনের চালায় টিনের চালায়
বৃষ্টি দ্যাখো নাচেরে।
খামখেয়ালির একটা বিকাল
চা চিগারেট ফুকিরে
বৃষ্টি এলো মেঘের লগে
বড় বড় ঠাডা পরেরে
টিনের চালায় টিনের চালায়
বৃষ্টি দ্যাখো নাচেরে।
বন্ধ কোলাহল ;একটা বিকাল
খোকা কোলে বসে, গল্প শোনেরে
বৃষ্টি দেখো বৃষ্টি কত-
ব্যাঙে ঘ্যাঙরঘ্যাঙ চো**রে
খামখেয়ালির একটা বিকেল
বৃষ্টি দ্যাখো পরেরে।
কাজের কাজ ঠনঠনা ঠন
বৃষ্টি কেমন পরেরে
কাজগুলো সব চুলোয় দিয়ে
বৃষ্টি হোগা মারোরে।
বৃষ্টি বড় অবাক করা
নামছে যে সেই বেইন্নাবেলা
পথঘাট সব ভিজেই এক সার
বৃষ্টি যে আইজ সারাবেলা।
এত বৃষ্টি দরকার নাইকো
বৃষ্টি তুমি চলে যাও
আবার তুমি পরে আইসোরে
রাগ অভিমান ;ধুলায় লুটায়
পরে তুমি আইসোরে।

স্মৃতিপট:সজল আহমেদ এর প্রেমেরর কবিতা

কবিতাটা উৎসর্গ করলাম,আমি নতুন কবিতা লিখি জাইনাও উৎসাহ না দিয়া চামেচোমে আমার কবিতাদি নিয়া যিনি হাসাহাসি করেন সেই বিখ্যাত মামা সুজন পারী এবং কিছু হয়নাই জেনেও যেই কইলজার ভাই উৎসাহ দেয় রাকিব হাওলাদার কে।


স্মৃতিপট

-সজল আহমেদ

______________________________________
ফিরে দেখা সেই আমার স্মৃতিপট
আজ নিকটিনে ভাসিয়ে দিয়েছি
আমি ক্লান্ত আমি শ্রান্ত
তবুও নয় আশাহত
যখনি সামনে পা বাড়িয়েছি
পেছন ফিরে তাকিয়েছি
পথভরা ছিলো লিক-লিকে জোক
ঘুমহীন দুটো চোখকে সান্তনা দিয়েছি এই বলে;
'কা' আমার কেউ নাই অতএব পিছপা কেন?
ওগুলো জোক না অভিশপ্ত স্মৃতিপট 
নিজেকে গালি দিয়েছি ;মামদির নাতী তোরে ভূতে চোদে?
একবার দোদুল্যমান মন বলে না পেছনে তাকাস না;
আরেকবার বলে;পেছনের সব স্মৃতি মনে কর।
মানুষের মন নঞর্থকেই আসক্ত;
বার বার সেই হিজল গাছ-নীল শাড়ি আর বাড়ির ছাদে গেঁথে গিয়ে,
স্মৃতিরা আমার সাথে ঠাট্টা করে।
হিজল গাছটা ঠিকই আছে 
শুধু বসা নেই পাখিটা-
বাড়ির ছাদে তুমিও দাঁড়িয়ে নেই
একপায়ে শুধু দাঁড়িয়ে আছে তোমার বাড়িটা।
আমি একবুক ভরসা নিয়ে
দাঁড়াই হিজলতলা -ফিরে এসেছে বুঝি পাখিটা,
দাঁড়িয়ে আছো তুমি রেলিং ধরে
পরে আছো সেই নীল শাড়িটা।
সব নিষ্ফল ;আমি বাধ্য হয়ে ফিরে আসি,
পুরোনো ডায়েরী খুলে বারবার আওড়াই
তোমায় নিয়ে রচিত সেই পুরোনো কবিতা।
জানি ফিরবেনা আর, দাড়াবেনা হেথা
আগের মত রেলিং ধরে,
তবুও আমার হায়াহীন মন
কাঁদবে তোমার রেখে যাওয়া সব পুনরাবৃত্তি করে।